Visits: 9

Content Creator কি? Content creator একজন পেশাজীবি যিনি সাধারণত যে কোন ক্রিয়াকলাপ করে থাকেন ডিজিটাল মিডিয়া প্লাটফর্মে উদ্দেশ্য করে । Blog Post, ই-মেইল, নিউজ লেটার, সোশাল মিডিয়া আপডেট, ইউটিউব, পোডকাস্ট, গ্রাফিক্স ইত্যাদিকে বোঝায়। Content Creator পেশাটি মূলত ব্যবসা, সৃজনশীলতা ও আর্থিক ভাবে লাভজনক— এই তিনের সমন্বয় বলা যায়।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মূল দিকটি হচ্ছে কন্টেন্ট তৈরি করা। বর্তমানে আকর্ষণীয়, সৃজনশীল ও ভালো কন্টেন্টের চাহিদা বাড়ছে।

ভালো Content Creator হওয়ার জন্য কি কি দরকার !

উদ্যোক্তা (Entrepreneur) বনাম কনেন্ট নির্মাতা (Content Creator):

একজন কন্টেন্ট নির্মাতা ও উদ্যোক্তার মধ্যে পার্থক্য আছে। আপনি হয়ত বলতে পারেন কন্টেন্ট নির্মাতা হচ্ছেন একজন সৃষ্টিশীল উদ্যোক্তা। কিন্তু এটি পুরোপুরি স্বতন্ত্র একটা পেশা।

একজন উদ্যোক্তার কাছে তার পণ্য হলো Brand। তিনি টার্গেট কাস্টমার কে Value Provide করে আস্থা অর্জন করেন। ব্যবসাকে দাড় করান। একজন কন্টেন্ট নির্মাতা কন্টেন্ট নির্মানের মাধ্যমে কাস্টমারের সাথে নিজের যোগাযোগ তৈরি করেন।

Engagement হচ্ছে তার মূল কাজ। তার পণ্য হচ্ছে মিডিয়া প্লাটফর্ম যেমন ব্লগ পোস্ট, নিউজ পোর্টাল, ইউটিউব, পোডকাস্ট ইত্যাদি। একজন উদ্যাক্তাও কন্টেন্ট নির্মাতা হতে পারেন। মূলত এ দুটি এক অপরকে সহায়তা করছে।

আবার একজন কন্টেন্ট নির্মাতা, একজন উদ্যাক্তাও কেননা তিনি নিজেই কাজ করে থাকেন। একদম শূন্য থেকে শুরু করে থাকেন। তার মূল কাজ হলো তার কন্টেন্টের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত অডিয়েন্স এর সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা।

কন্টেন্ট নির্মাতা কিভাবে হওয়া যাবে?

অনেকে মনে করেন একজন কন্টেন্ট নির্মাতা হতে গেলে তাকে লেখালেখির ক্ষেত্রে উঁচুমানের দক্ষতা থাকতে হবে।

জনপ্রিয় ব্লগারদের মধ্যে অনেকের প্রথমদিকে লেখালেখির ক্ষেত্রে তেমন কোন সহজাত আকর্ষণ ছিল না।ধারাবাহিকভাবে লেখার মাধ্যমে, তারা প্রতিদিন তাদের লেখার মান বৃদ্ধি করেছেন।

আপনার,একজন ভালোমানের Content Creator হওয়ার জন্য খুব বেশি প্রতিভাবান হওয়ার দরকার নেই। নিজের স্কিলকে ভালো করার জন্য কঠোর পরিশ্রম ও মানসিক দৃঢ়তাই যথেষ্ট।

নিচের অভ্যাসগুলো,টিপস এবং উপকরণগুলো আপনাকে একজন উঁচুমানের Content Creator হতে সাহায্য করবে—

১. এমন ভাবে লিখুন যেন কারো সাথে কথা বলছেন,

আপনাকে একজন Content Creator হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে হলে এমন ভাবে লিখতে হবে যাতে অডিয়েন্স আপনার কন্টেন্টের সাথে সহজে নিজেকে কানেক্ট করতে পারে।

এজন্য প্রয়োজন যে বিষয়ে লিখছেন সে বিষয়ে জানাশোনা, আপনার বক্তব্যের স্বপক্ষে ডাটা উপস্থাপন এবং সুনির্দিষ্ট উদাহরণ দিয়ে বক্তব্যকে বোধগম্য করা। অনেকে ভুলবশত মনে করে থাকে ভালো লেখার জন্য ভাষার দিক থেকে উচুমানের হতে হবে।এটা একটা ভুল ধারণা।

মনে রাখবেন  আপনার পাঠক আপনার সাথে একজন মানুষ হিসেবে সংযোগ স্থাপন করে। আপনার লেখায় যদি তাদের সমস্যার সমাধান আলোচনা করা থাকে তাহলে তারা সহজেই লেখার সাথে কানেক্ট হবে। আর এটার জন্য সহজ অনাড়ম্বর মৌখিক ভাষার ব্যবহার অনেক বেশি কার্যকর।

উদাহারণ হিসেবে মার্কেটিং স্পেসে সবচেয়ে ভালো কপি রাইটার Neville Medhora কে উল্লেখ করা যায়। সে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে খুব মজাদার ও আনন্দদায়ক ভাবে উপস্থাপন করে এবং নিজের আইডিয়ার সাথে পাঠকের যোগাযোগকে সহজ করার জন্য Stick figure ব্যবহার করে থাকে।

২. নিজের ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে সবকিছু জানুন

শীর্ষস্থানীয় কন্টেন্ট নির্মাতারা নিজেদের ইন্ডাস্ট্রির উদীয়মান ট্রেন্ড গুলোর ব্যাপারে সবসময় সচেতন থাকে।

ক্রমাগত নিজের ইন্ডাস্ট্রির সব দিক সম্পর্কে নিজেকে আফডেট রাখুন। আপনার Niche এর সব গুলো ক্যাটাগরি সম্পর্কে জানুন উদাহরণ হিসেবে বলা যায় আপনি যদি রিয়েল এস্টেট শিল্পের জন্য লিখেন তবে আপনাকে আজকের মর্গেজ হারের চেয়েও বেশি কিছু জানতে হবে।

আপনাকে বিনিয়োগ, বিভিন্ন হোম লোন, মর্গেজ অনুমোদনের প্রক্রিয়া এবং আর ও অনেক কিছু বুঝতে হবে। আপনার জানার পরিধিকে প্রসারিত করুন যা আপনার জন্য আরো বেশি কন্টেন্ট তৈরির সুযোগ করে দিবে।

৩.ধারাবাহিকতা বজায় রাখা

সহজে কোন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন সম্ভব নয়। কোন কাজে ধারাবাহিক ভাবে লেগে থাকা ঐ কাজে এক সময় দক্ষতা তৈরি করে। লেগে থাকা মানে এই নয় যে আপনাকে প্রতিদিন এক হাজার শব্দ লিখতে হবে।

আপনার জন্য যেটা উপযোগী সে অনুযায়ী নিয়মিত লিখা।আর এই জন্য  নিজেকে একটা শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসা এবং সেটাকে কঠোরভাবে ধারণ করা। কাজে নিয়মিত লেখার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। আমাদের মাথায় অনেক কিছুই ভিড় করে। কিন্তু আমরা এগুলো লিখে রাখি না। ১০-১৫ মিনিট সময় নিয়ে প্রতিদিন ছোট পরিসরে লিখে রাখুন।

পরবর্তীতে তাকে আরো বড় আকারে লিখুন। দেখবেন একসময় আপনি লিখতে উৎসাহ পাচ্ছেন। অধিকাংশ সফল কন্টেন্ট নির্মাতা লেখার মধ্য থেকে উৎসাহ পান, যা তাদেরকে সফল করেছে।

৪. আপনার টার্গেট অডিয়েন্স সম্পর্কে জানুন,

একজন সৃজনশীল পেশাদার কন্টেন্ট নির্মাতা হিসেবে এটা আপনার জন্য হজম করা সত্যিই কঠিন—আপনি আপনার অডিয়েন্সের দয়ার মধ্যে রয়েছেন এবং তাদের চাহিদাগুলো আপনার সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে।

কিন্তু দিন শেষে তারাই আপনার বিল পে করবে। আপনি আপনার আগ্রহ ও সৃষ্টিশীল সুযোগগুলো খুজে পাবেন যখন আপনি আপনার অডিয়েন্স সম্পর্কে গভীর ভাবে জানবেন।

সমস্ত সফল কন্টেন্ট নির্মাতাদের একটা বিশেষ গুণ হলো তারা তাদের অডিয়েন্সের ভেতর-বাহির সবকিছু জানে। আপনার নিজস্ব পাঠককে পরীক্ষা করুন— তারা কি চায় যা এখনো আপনি তাদেরকে দেন নি? তাদের কি কি সমস্যা আছে যা আপনি তাদের জন্য সমাধান করতে পারেন?

৫.আপনার নিজের Voice প্রতিষ্ঠা করুন, 

আপনার ইন্ডাস্ট্রিতে আপনি একমাত্র কন্টেন্ট নির্মাতা নন। যার মানে হলো, ইন্ডাস্ট্রি যা চাই— পরামর্শ, পর্যবেক্ষণ এবং চিন্তার নেতৃত্ব — আপনি কেবলমাত্র সেই ব্যক্তি নন।

আপনার ক্ষেত্রের অন্যান্য কন্টেন্ট নির্মাতাদের থেকে আলাদা হওয়ার জন্য আপনি অনেক কিছুই করতে পারেন— একটি নতুন কন্টেন্ট মিডিয়ামে রুপান্তরিত করা, বিভিন্ন চ্যানেলে আপনার কন্টেন্ট প্রচার করা এবং সময়ের সাথে সাথে অভিজ্ঞতা ও বিশ্বাস অর্জন করা। এত কিছু করার পরও মনে রাখতে হবে আপনি যাদের সাথে প্রতিযোগিতা করছেন মনোযোগ পাওয়ার জন্য, তারাও একিই কাজ করছে।

আপনি আপনার কন্টেন্টে আনতে পারেন,যা অন্যরা পারে না, এটাই আপনার স্বতন্ত্র ভয়েস।

একজন পাঠক তথ্যের জন্য আপনার কন্টেন্টে ক্লিক করেন কিন্তু তারা ফিরে আসেন আপনার ব্যক্তিত্ত্বের জন্য । আপনার ব্যক্তিগত গল্প যা কন্টেন্টকে অন্য কন্টেন্ট থেকে আলাদা করে তার জন্য পাঠক ফিরে আসে।

Audience-First দৃষ্টিভঙ্গি:

মোটের ওপর এটা তাদের জন্য লেখা, তাই না?

আপনি এটা নিশ্চিত করুন,আপনার কন্টেন্টটি আপনি কতটা অসাধারণ তা প্রকাশ করবে না বরং তারা যে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তার সমাধান গুলো তুলে ধরুন।

আপনার কন্টেন্টের মাধ্যমে আপনার অডিয়েন্সকে  শিক্ষিত করুন যাতে তারা পড়ার সাথে সাথে তা বাস্তবায়ন করতে পারে।

আশা করি পাচটি টিপস আপনার Content Creator ক্যারিয়ারে সহায়তা করবে।আপনার মতামত কমেন্টে জানান।

লেখক: Morshed Alam

আরও জানতে কমেন্ট করতে পারেন?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *