ইসলামে শিক্ষা ও জ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। জ্ঞানকে আলো আর অজ্ঞতাকে অন্ধকারের সাথে তুলনা করা হয়েছে। শিক্ষা ও জ্ঞানের সমাজই হচ্ছে আলোকিত সমাজ আর অশিক্ষা ও জ্ঞানহীন সমাজ বাস্তবিক অর্থেই অন্ধকারাচ্ছন্ন। সভ্য, উন্নত ও মানবিক সমাজের পূর্বশর্ত হলো সমাজে জ্ঞান ও শিক্ষার উপস্থিতি। জ্ঞানের অভাব সমাজকে কতটা তমসাচ্ছন্নতায় নিমজ্জমান করে তার অন্যতম দৃষ্টান্ত হলো, খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতকে মরুময় আরবে মানব ইতিহাসের জঘন্যতম আইয়ামে জাহেলিয়াত তথা অন্ধকারের যুগ।
সেই অন্ধকারের যুগের অমানিশার চাইতেও গভীর তমসাচ্ছন্নতাকে জ্ঞানের আলোকবর্তিকার মাধ্যমে দূর করে সত্যিকার অর্থে এক আলোকোজ্জ্বল সমাজের গোড়াপত্তন করা হয়েছিল। সেই সমাজে দীর্ঘকালের পুঞ্জীভূত তিমির রেখার মূলোৎপাটনে সর্বপ্রথম যে নির্দেশনা অবতীর্ণ হয়েছিল সেটি হলো- ‘পড়ো’। কেননা, পড়ার মধ্য দিয়েই অর্জিত হয় শিক্ষা। আর শিক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলই জ্ঞান। তাই ঐশী প্রত্যাদেশে বলা হলো- পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।
এভাবে অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজকে বদলে দিতে সর্বাগ্রে প্রদত্ত নির্দেশনা সংবলিত যে পবিত্র বাণী, তার পাঁচটি বাক্যের চারটিতেই পড়া, শিক্ষা ও জ্ঞান বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে। সেই পড়া, শিক্ষা ও জ্ঞান যখন মলাটবদ্ধ রূপ পরিগ্রহ করে, তখন সেটিকেই আমরা বই হিসেবে বিবেচনা করি। ইসলামে বইয়ের মর্যাদাও এখানেই নিহিত। ছয় হাজার ৬৬৬টি আয়াত সংবলিত মহান আল্লাহর অমিয় বাণীর সংকলন পবিত্র কুরআন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বই; নির্ভুল এক মহাগ্রন্থ।
কুরআনই সেকালের অন্ধকার সমাজকে আলোকিত করেছিল। তাই কুরআন তো অবশ্যপাঠ্য, এ ছাড়া যেসব বই আলোকিত সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখে, তা-ও পড়া আমাদের একান্ত কর্তব্য।
-লেখক : ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন
আপনার মতামত লিখুন :