ভবিষ্যত-ই হোক আমাদের বর্তমান


admin প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২২, ২০২৩, ৯:৫৭ অপরাহ্ন /
ভবিষ্যত-ই হোক আমাদের বর্তমান

আমার হৃদয়ে আজও ছোটবেলার স্মৃতিগুলো লতার মত জড়িয়ে আছে।

শাম্মী আক্তারের কণ্ঠে ও গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা ‘আমি যেমন আছি তেমন রব বউ হবো না রে’ গানের লাইনটির কথা মনে কি পড়ে?

এত দিন পরে মনে পড়ে গেলো। ভাবছি বউ না হলেও ‘যেমন আছি তেমন রব’ থাকা কি সম্ভব? আমরা জন্মেছি যখন পরিবর্তন তো আমাদের হবেই। অথচ মানুষ অমরত্বের আশায় এমন কিছু নেই যে করেনি! মৃত্যুর পরে দেহ মমি করে রেখেছে নিজেকে অমর করে রাখার জন্য, শিখেছে নানা কৌশল। তবে মানব জাতি কি সত্যিই কোনোদিন অমরত্ব লাভ করতে পারবে?

আপনি কি মনে করেন?

আমি প্রকৃতিবাদী হলেও মনে করি সৃষ্টির কোন কিছুই অমর না! তবে রুপান্তরবাদের যে সম্ভাবনাগুলো দেখতে পাচ্ছি তাতে মনে হচ্ছে প্রতিনিয়ত শক্তির রুপান্তর হবে বৈজ্ঞানিক উপায়ে।কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে যেভাবে কাজ শুরু হয়েছে বা আলোচনা হচ্ছে তাতে বেশ পরিষ্কার যে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র/ন্যানো রোবোট মানুষের শরীরে ঢুকে নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোগ সারিয়ে তুলবে, মানুষকে বৃদ্ধ হতে ঠেকাবে এবং সৃষ্টি হতে থাকবে ন্যানো টেকনোলজির নতুন রোবট ধারি মানুষ। প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন মানুষের সৃষ্টি কমতে থাকবে, শেষে আমাদের মত মানুষ হারিয়ে যাবে।

আইনস্টাইনের ভবিষ্যৎ বাণী ছিলো, ৪র্থ বিশ্বযুদ্ধ হবে হাতাহাতির মধ্য দিয়ে। কারণ, ৩য় বিশ্বযুদ্ধে মানব সভ্যতার ধ্বংস হবে এবং যারা বেঁচে থাকবে তারা নতুন করে জীবন শুরু করবে এবং সে জীবন, এ জীবনের থেকে ভিন্ন ধরণের হবে।

সাবেক গুগল প্রকৌশলী যে ভবিষ্যৎ বাণী করেছে, সেটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষ কিন্তু ক্ষয়িষ্ণু মানুষের শরীরকে অমর করার ভবিষ্যৎ বাণীর সাথে যৌক্তিক সম্পর্ক কম। রোগ সারানো মানে এই নয় যে আমাদের শরীরের কোষকে অমর করে রাখা সম্ভব। তবে সেটি হয়তো সম্ভব হতেও পারে তবে নতুন কোষ সৃষ্টি এবং সেটা শত শত বছর ধরে অব্যাহত রাখতে পারবে কিনা তাতে সন্দেহ আছে।

আপনাদের কি মনে হয়?

মনে যাই হোক না কেন একটি বিষয় নিশ্চিত সেটা হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অচিরেই আমাদের আবেগ এবং বিবেকের খোঁজ খবর নিয়ে বর্তমানকে জটিল করে দিবে। দেশ ও জাতিকে যদি হতাশ করতে না চাই তবে যেমন আছি তেমন থাকলে চলবে না। পুরো দেশের অবকাঠামোর পরিবর্তনে দরকার নতুন পদ্ধতির প্রয়োগ এবং বিশ্বায়নের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট হয়ে চলতে শেখা।

এখন আমি আমার জীবনের অভিজ্ঞতা ও ভাবনা থেকে কিছু কথা বলতে চাই যা হয়তো হতে পারে কারো প্রিয় বা অপ্রিয়।

শুরু করি ভাষা আন্দোলন দিয়ে;
কারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ভাষা আন্দোলনে?
সালাম, বরকত, রফিক, শফিক আরও কত অজানা নাম। তারা সবাই গ্রামের ছেলে। দেশ স্বাধীন করার জন্য কারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন? কারা জীবন দিয়েছিলেন? জাতীর পিতা শেখ মুজিব থেকে শুরু করে যাদের নাম আসবে তারা সবাই গ্রামের ছেলে।

বাংলাদেশের ৯০% লোক আমরা গ্রামের ছেলে/মেয়েরা সব সময় ঝাঁপিয়ে পড়ি দেশের স্বার্থে, দেশ গড়ার স্বার্থে, দেশকে বহিঃশত্রুর থেকে রক্ষা করার স্বার্থে। অথচ সব সময় দেখছি, ভালো কিছু করা হচ্ছে, ভালো কিছু গড়া হচ্ছে শহরে এবং ভোগ বিলাসের জন্য যা কিছু করা হচ্ছে বা হবে তার অধিকাংশই শহরে।

যুদ্ধের সময় যারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে ছিল পৃথিবীর অনেক দেশে, তাদের সামর্থ ছিল অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে, তাই তারা সহজেই দেশ ছাড়তে পেরেছিল এবং যারা দেশ ছেড়েছিল তাদের বেশির ভাগই ছিল শহরের মানুষ।

হ্যাঁ, আমরা দেশ স্বাধীন করে ছুঁটেছি বিদেশে, শিক্ষা এবং অর্থ উপার্জনের স্বার্থে, সাথে ভালো যা দেখছি বা শিখছি তা কীভাবে দেশে করা যায় তা স্বপ্নের জালে বেঁধে মনের মাঝে ধরে রেখেই ক্ষান্ত হইনি, সেটা প্রচার করার জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করে চলছি।

আমার এই বিশ্বভ্রমণে দেখছি হাজারো মেহনতি ভাইয়েরা যারা এসেছে বাংলাদেশ থেকে পৃথিবীর অন্য দেশে, তারা কঠিন কাজ করছে, একই সাথে যখন তারাও ভালো কিছু দেখছে তা তারা বাংলাদেশে নিয়ে যাচ্ছে এবং উৎপাদন করছে, নতুন এবং নানা ধরনের ফল-মূল থেকে শুরু করে খাদ্য সামগ্রী। তারাও সংগ্রামী মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধ করে চলছে তারাও।

দেশকে বহিশত্রুর থেকে মুক্ত করলেই তো দেশ মুক্ত হলো না? দেশকে খাদ্যের অভাবমুক্ত, অন্ন-বস্ত্রের অভাবমুক্ত, কুশিক্ষা মুক্ত, পরাধীন চেতনামুক্ত, দুর্নীতি মুক্ত করতে হবে।

সোনার বাংলা এবং স্মার্ট বাংলা গড়তে হলে যারা বর্তমানে নানা দায়িত্বে আছেন তাদেরকে সক্রিয়ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। আমারই অনেক বন্ধু রয়েছে যাদের বাংলাদেশে অনেক ক্ষমতা রয়েছে তারা ইচ্ছে করলে একটু হাত বাড়াতে পারে এবং পারে এসব কঠিন কাজকে সহজ করে দিতে। কিন্তু তারা তা করছে না। তাই এই যুদ্ধে জয়ী হতে হলে আমাদের যার যা আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
যারা অতীতে দেশ গড়ার কাজে আমাদের সাথে ছিল না, থাকেনি বা থাকবে না তাদেরকে আমরা রাজাকার বলতে পারি। কিন্তু যাদের সাথে আমাদের মতের ভিন্নতা রয়েছে বা যারা অন্য ধর্মে বিশ্বাসী, তাদের ব্যক্তি ও মতের স্বাধীনতার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা থাকতে হবে বা তাদের বিশ্বাসের উপর হস্তক্ষেপ করতে আমরা পারিনা, তাতে মানব জাতীর অকল্যাণ হবে এবং মনুষ্যত্বের অবনতি ঘটবে। তবে আমরা সব সময় মত-দ্বীমত পোষণ করেতে পারি।

এখানে একটি বিষয়ে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিতে চাই, তা হলো ধর্মশিক্ষা পদ্ধতি, যা আমাদের সমাজকে ঠেলে দিচ্ছে দিনের পর দিন অন্ধকারের দিকে।

এর কারণ কি?

ধর্মকে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে পৃথক পৃথকভাবে। যার কারণে পুরো সমাজ হচ্ছে বিভক্ত এবং একে অন্যের ধর্ম সম্পর্কে না জানার কারণে বাড়ছে ঘৃণা, লোপ পাচ্ছে মনুষত্বের। এ থেকে রেহাই পেতে হলে আমাদের শিখতে হবে, জানতে হবে স্কুল পর্যায়ে, আলোচনা করতে হবে এমনভাবে যাতে মানুষে মানুষে ধর্ম বা অন্য কোনো পার্থক্যের কারণে বিভেদ ও ঘৃণা না ছড়ায় এবং একই সাথে যেন ধর্ম বিবর্জিত শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যক্তি -পরিবার ও সমাজে কল্যাণের স্থলে অকল্যাণ না হয়। খেয়াল রাখতে হব, only then we can understand each other with mutual respect love and tolerance.

আমাদের পরিচয় হতে হবে একটি, আর তা হচ্ছে আমরা বাংলাদেশি।

শিক্ষাঙ্গনের পরিবর্তনের সাথে সাথে যারা অন্য প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত রয়েছেন তাদেরও বদলাতে হবে। আমি মনে করি, যারা ক্ষমতায় থেকেও তার সদ্ব্যবহার করছে না, যারা অন্যকে বিনা অপরাধে অপরাধী করছে, যারা অসৎ পথে অর্থ সঞ্চয় করছে, যারা দুর্নীতি করছে, তাদেরকেও আমরা রাজাকার বলতে পারি। কারণ তারাই হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে দেশের শত্রু। এদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে যেমনটি পড়েছিলাম অতীতে। কিন্তু এখানে একটু সমস্যা আছে তা হলো, আগের শত্রু যারা তারা ছিল বহির্শত্রু আর এরা হচ্ছে আমাদের নিজেদের লোক, কেউ আমার বাবা, কেউ আমার মামা, কেউ আমার চাচা, কেউ আমার বন্ধু, কেউ আমার বন্ধুর বন্ধু, তাই এদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া বড় কঠিন!

এই জন্য দরকার সুশিক্ষা।

সুশিক্ষা— should always create some well value, well value can or should be the part of moral value for mankind and nature.

এ বিষয়ে শিখতে হবে, জানতে হবে। আর সেই সুশিক্ষাই দেখাবে আমাদের সেই পথ যে পথে যুগে যুগে চলেছেন ভালো মানুষেরা। যারা শুধু দিয়েছেন সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে দূরে থেকেছেন। যারা মানব জাতীর কল্যাণ ও ভালোবাসা বয়ে এনেছে যুগে যুগে। আমাদের করতে হবে স্মরণ এবং বরণ তাদেরকে। ভাবতে হবে মানুষের কথা, ফিরিয়ে আনতে হবে মনুষ্যত্বকে।

উন্নত পৃথিবীতে জীবনের ইতিহাসে একটি গভীর পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে এআই (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) এবং এর জন্য পরিকল্পনা আরও জোরালো করা উচিত। মানব-প্রতিযোগীতামূলক বুদ্ধিমত্তা সহ এআই সিস্টেমগুলো সমাজ এবং মানবতার জন্য গভীর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে সেক্ষেত্রে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে সকল সংস্থাগুলোর এক সাথে কাজ করা উচিত। দুর্ভাগ্যবশত পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনার এই স্তরটি সঠিকভাবে ঘটছে না, যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এআই কিছুটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ভবিষ্যৎবাণী বা নির্ভরযোগ্যভাবে একে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে কিনা এটাও এখন প্রশ্ন! যদি সবকিছু সঠিকভাবে এগোতে থাকে তবে এআই- এর মাধ্যমে মানবতা একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ উপভোগ করতে পারবে বলেও অনেকে আশাবাদী। যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নানা ভাবে গণতন্ত্রে প্রভাব রাখতে পারবে। সরকারের সঙ্গে জনগণের ঘনিষ্ঠতা সহজতর করা, ট্যাক্স সিস্টেম এবং ভোটার নিবন্ধন সহ ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেও জনগণকে সহায়তা করতে পারবে।

এটি জনগণের প্রতি সরকারকে দায়বদ্ধ করার বিষয়টি সহজতর করবে। এছাড়াও বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কিছু শক্তিশালী টুলস রয়েছে, যেগুলো সরকারি ব্যয় পর্যবেক্ষণ, দুর্নীতির ক্ষেত্রগুলো শনাক্তকরণ এবং নির্বাচনী ফলাফল পর্যবেক্ষণে সহায়তা করতে সক্ষম হবে। ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জনগণের জন্য সরকারকে জবাবদিহির আওতায় আনতে সহায়তা করবে।

এআই-এর কারণে যে নাটকীয় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যাঘাত বিশেষ করে, গণতন্ত্রের মোকাবেলা করা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ বলেও অনেকে মনে করছেন। অন্যদিকে গণতন্ত্রকে ব্যাহত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভূমিকা নিয়েও বর্তমানে বেশ আলোচনা চলছে। এমনকি বেশ কিছু পর্যবেক্ষক সতর্ক করছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই গণতন্ত্রের পরিসমাপ্তিও ঘটাতে পারে। কারণ এআই গণতন্ত্রের অবমূল্যায়ন করতেও ব্যবহৃত হতে পারে। আর তাই এ বিষয়টি আমাদের মনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ– এআই কোনো নিজস্ব স্বয়ংক্রিয় এজেন্ট নয় যে, সে তার ইচ্ছামতো কাজ করবে। এটি ভালো-মন্দ উভয়ের জন্যই কাজ করতে পারে। বিষয়টি নির্ভর করে কে কোন উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছে। গণতন্ত্রকে অবমূল্যায়ন করতে এআই ব্যবহারের বেশ কিছু উপায় রয়েছে। মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে অথবা সুনির্দিষ্ট কণ্ঠকে দমিয়ে দিতে এআই বহুবিধ জন মতে ব্যবহৃত হতে পারে।

সৃষ্টির রহস্যে পরিষ্কার যে আকাশ এবং পাতালের মাঝখানে কোন বাধা নেই। তাহলে কী করে সম্ভব আমাদের গতিশীল জীবনকে বাঁধার মাঝে আটকে রাখা! আমার মত অনেকেই ভাবছে অনেক জটিল এবং ক্রিয়েটিভ বিষয় নিয়ে যা সত্যিকারার্থে স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও জানে না। জানে না রাজনীতিবিদগণ। শিক্ষা যেমন সেই শুরু থেকে গড়ে উঠেছে এবং তাকে বেড়াজালে বদ্ধ করা হয়েছে। যার ফলে আমাদের চিন্তা চেতনায় সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু এআই আমাদেরই তৈরি এক সৃষ্টি অথচ তার ক্রিয়েটিভিটি দ্রুততার সাথে সীমা লঙ্ঘন করে প্রসারিত হতে চলেছে। আমরা মানুষ হয়ে যা করতে পারিনি অথচ এআই সেটা করতে পারছে। তাহলে প্রশ্ন হতেই পারে এআই মানুষের তৈরি তা কি করে সীমাহীন হতে পারে? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর হয়ত পাওয়া যাবে তবে এ মূহুর্তে এলন মাস্ক এবং অন্যরা ‘সমাজের ঝুঁকি’ উল্লেখ করে ছয় মাসের জন্য শক্তিশালী এআই সিস্টেমের বিকাশ বিরতির আহ্বান জানান। অন্যথায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সিস্টেমগুলো শীঘ্রই মানবতার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। মূলত এআই-এর দ্রুত বর্ধন সমাজ তথা রাষ্ট্র মোকাবেলা করতে বা মেনে নিতে শত ভাগ প্রস্তুত নয়। এআই রাজনীতিবিদদের জন্য বড় আকারের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাত্র চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে এমনভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে যে রাজনীতিবিদরা ভয়ঙ্কর আতঙ্কের মধ্যে আছেন। অর্থনৈতিক সিস্টেম থেকে শুরু করে মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়ের ওপরও বিশাল হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এআই যদি গণতন্ত্রের হুমকি হয়ে দাঁড়ায় তবে বাক স্বাধীনতা হরণ করতেও এর কোন সমস্যা হবার কথা নয়। এমন একটি সময় আমার ভাবনায় শুধু একটিই প্রশ্ন তাহলে আমরা এত যুগ যা করেছি তা চিরস্থায়ী নয়, মানে দুই প্লাস দুই চার না হয়ে অন্য কিছুও হতে পারে বা সম্ভব। যাইহোক আমি রোবট নই, আমি মানুষ, আমি ভুল করি, আমি ভুল থেকে শিখি।

প্রতিদিন আমি আমার মনের মধ্যে একটি সহজ চিন্তা নিয়ে আমার দিন শুরু করি। আজ আমি যেখানে যাই না কেন, যা-ই করি না কেন, আমি নিজের এবং অন্যদের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ, প্রেমময় এবং আনন্দময় জীবন তৈরি করব। আমি যদি দিনে শতবার এই কাজটি করতে ব্যর্থ হই তাতে কি আসে যায়? একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মানুষের জন্য ব্যর্থতা বলে কিছু নেই। আমি শতবার ব্যর্থ হলেও এই ব্যর্থতার মাঝে শত শত নতুন কিছু শিখব। আমি সত্যিই যদি প্রতিজ্ঞা করি এবং যত্নশীল হই সেটা পূর্ণ করতে এবং আমি নিজেকে যদি এইভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করি, তাহলে আমার মন সংগঠিত হবে, একবার আমার মন সংগঠিত হলে আমার চিন্তাভাবনা এবং আবেগগুলোও সংগঠিত হবে। আমার শক্তিও একই দিকে সংগঠিত হবে। একবার আমার মন, মস্তিষ্ক, আবেগ, শক্তি সংগঠিত হলে আমাকে কোন কিছুই ঠেকাতে বা বাধা দিতে পারবে না। আমার ফোকাস করার ক্ষমতা এত শক্তিশালী হবে যে আমি আমার মনকে শতভাগ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হব। তারই প্রমাণ এআই, তার শক্তিশালী হবার পেছনে রয়েছে শতভাগ ফোকাস যা তার শতভাগ নিয়ন্ত্রণে এবং মজার ব্যাপার হলো এআই তো মানুষের তৈরি রোবট। সে যখন পেরেছে আমি মানুষ, আমি কেনো পারবো না!

—কেহ জানিবে না মোর গভীর প্রণয়, কেহ দেখাবে না মোর অশ্রুবারিচয়। আপনি আজিকে যবে শুধাইছ আসি, কেমনে প্রকাশি কব কত ভালোবাসি।

লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন।
Rahman.Mridha@gmail.com