Visits: 7

প্রায়ই নখে গুঁতো বা আঘাত পাই আমরা। যেমন ঘরের কোনো একটা আসবাবের পায়ার সঙ্গে পায়ের কনিষ্ঠা আঙুল লেগে নখে আঘাত পেতে পারি। চলতি পথে ভিড়ে কেউ পা মাড়িয়ে দিলে নখে আঘাত লাগে। এভাবে অনেক সময় নখ উপড়েও যায়। অনেকে আবার শখ করে নখ বড় রাখেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সামান্য আঘাতেও উপড়ে বা ভেঙে যেতে পারে নখ। যাঁরা গভীর ও কোনা করে নখ কাটেন, তাঁদের নখের কোনা দেবে গিয়ে ভেতরে ময়লা জমে ইনফেকশন হয়ে যায়। এসব নখও অনেক সময় সামান্য আঘাতে উপড়ে যেতে পারে।

কেন এমন হয়

আমাদের দেশের আবহাওয়া অনেক আর্দ্র। আর পায়ের যত্ন নেয় খুব কম মানুষ। ঠিকমতো নখ কাটার নিয়মও অনেকে জানেন না। ফলে যত্নের অভাবে অনেকের নখের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে। এ ছাড়া নখ বেশি বড় রাখলে ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা বেড়ে যায়।অনেক সময় সামান্য আঘাতে উপড়ে যেতে পারে নখ

কী করণীয়

নখের গোড়ায় রক্ত চলাচল আর নার্ভ সাপ্লাই দুটিই অনেক বেশি থাকে। তাই নখ উপড়ে গেলে অনেক রক্তপাত ও তীব্র ব্যথা হয়। এতে ঘাবড়ে না গিয়ে প্রথমে শুকনা কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থান চেপে ধরে রাখতে হবে। বাসায় আইস প্যাক থাকলে সেটা দিয়ে চেপে ধরে রাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ঠান্ডা জিনিসের স্পর্শে রক্তনালি সংকুচিত হয়, তাই রক্তপাত ও ব্যথা দুটিই কমে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়। নখ যদি পুরোটা উঠে যায়, তাহলে কিছুদিন নিয়মিত ড্রেসিং করলে ক্ষতস্থান শুকিয়ে যাবে। আর যদি আধ ভাঙা নখ রয়ে যায়, তাহলে কোনো সার্জনকে দেখিয়ে চিকিৎসা নিলে ভালো হবে।

ক্ষতস্থানের যত্ন কীভাবে করবেন

হাতের নখ নতুন করে গজাতে সময় লাগে ৬ মাস আর পায়ের নখ ১২-১৮ মাস। নখের নিচের চামড়াকে বলা হয় নেইল বেড। এটি খুব সংবেদনশীল। তাই আঘাত পেলে বা অস্ত্রোপচারের পর প্রথম সপ্তাহে নেইল বেড ঢেকে রাখতে হবে। নিয়মিত ড্রেসিং করাতে হবে। ফার্মেসিতে মেডিটুলি বা সুপ্রাটুলি নামে একধরনের ড্রেসিং কিনতে পাওয়া যায়। সেটি মাপমতো কেটে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়। না পাওয়া গেলে পরিষ্কার গজ পিসে ভ্যাসলিন মেখে নখ ঢেকে রাখতে হবে।

যেকোনো ক্ষত শুকাতে জিংক বি, ভিটামিন সি ভালো কাজ করে। সেই সঙ্গে ক্ষতস্থান শুকাতে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে দিনে দু-তিনটি ডিম খেতে পারলে ভালো।

প্রতিরোধের উপায়

১. নিয়মিত পায়ের যত্ন নিতে হবে। এক গামলা হালকা গরম পানিতে এক টেবিল চামচ লবণ, এক চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে তাতে দুই পা ১৫-২০ মিনিট চুবিয়ে রাখতে হবে। এরপর সাধারণ পানিতে পা ধুয়ে পুরোনো পরিষ্কার টুথব্রাশ দিয়ে নখ ও আঙুলের ফাঁকে ব্রাশ করতে হবে। এটি নিয়মিত করতে পারলে খুব ভালো। তবে কমপক্ষে সপ্তাহে একবার করতে পারলে পা ভালো থাকবে।

২. নখ কাটার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন কোনাকুনি না কেটে নখের গোড়ার সমান্তরাল করে কাটা হয়। এতে নখের কোনা ভেতরের দিকে দেবে যায় না। খুব গভীর করে কাটবেন না।

৩. নখ বেশি বড় রাখা ঠিক নয়। হাতের নখ সপ্তাহে একবার আর পায়ের নখ প্রতি দুই সপ্তাহে একবার করে কাটতে হবে। এখন কসমেটিকসের দোকানে নকল নখ কিনতে পাওয়া যায়। ফ্যাশনের জন্য বিকল্প হিসেবে সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।

৪. মোজা পরলে প্রতিদিন ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে পরতে হবে।

*ডা. রেজা আহমদ: কনসালট্যান্ট সার্জন, ইবনে সিনা হাসপাতাল, সিলেট

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *